1. admin@dailypollyerkagoj.com : admin :
বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৩৪ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম :
ধনবাড়ীতে হোটেল -রেস্তোরাঁ ও মিষ্টির দোকান শ্রমিক ইউনিয়নের কমিটি পুনর্গঠন  রূপগঞ্জে মাদক, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি ও নৈরাজ্যের প্রতিবাদে বিএনপির সমাবেশ শিক্ষার্থীর প্রতি শ্লীলতাহানির অভিযোগেপ্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপের দাবি কালীগঞ্জ উপজেলা  বিএনপির নেতৃবৃন্দের সাথে নবাগত ইউএনও’র মতবিনিময় কালিগঞ্জে প্যানেল চেয়ারম্যান অপসারণের দাবিতে বিএনপির বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন  রামপালে ছাত্রদলের লিফলেট বিতরণ মোহনপুরে সুধীজনদের সাথে রাজশাহীর নবাগত জেলা প্রশাসকের মতবিনিময়  কালীগঞ্জে দেশী মদ তৈরির আস্তানায় অভিযান, প্রায় ৪শত লিটারদেশীয় মদ উদ্ধার, আটক ১ জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে নগরীর ৩নং ওয়ার্ড থেকে বর্ণাঢ্য র‍্যালি রাজশাহীর বাঘায় চিকিৎসকদের লাঞ্ছিত করার প্রতিবাদে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন

রংপুরে এ বছর হাঁড়িভাঙা আমের টার্গেট ২৫০ কোটি টাকা। 

দৈনিক পল্লীর কাগজ ডেস্ক :
  • প্রকাশের সময় : মঙ্গলবার, ৯ মে, ২০২৩
  • ২৩৪ বার পঠিত

রংপুরে এ বছর হাঁড়িভাঙা আমের টার্গেট ২৫০ কোটি টাকা।

মাটি মামুন রংপুর।

এ বছর হাঁড়িভাঙা আমের টার্গেট ২৫০ কোটি টাকা

বছরের পর বছর ধরে রংপুরে ধানসহ অন্যান্য ফসল উৎপাদন হয়ে আসছে।

তবে ধানের ন্যায্যমূল্য না পাওয়ায় দিন দিন বেড়েছে হতাশা। এখন সেই হতাশার ছাপ কেটে গেছে।

স্বাদে গন্ধে অতুলনীয় হাঁড়িভাঙা আম বদলে দিয়েছে এখনকার চাষিদের পরিচয়। ধানচাষিরা এখন আমচাষি। প্রতি বছর আম চাষ করে লাখ লাখ টাকা আয় করে শুরু হয়েছে তাদের দিন বদলের গল্প। ভাগ্য বদলে গেছে হাজার হাজার আমচাষি ও কৃষকের। হাঁড়িভাঙা আম যেন রংপুরের অর্থনীতির জন্য আশীর্বাদ হয়ে এসেছে।

বিষমুক্ত ও অতি সুমিষ্ট আঁশহীন হাঁড়িভাঙা আমের চাহিদা বাড়ছে দিন দিন। কয়েক বছর ধরে ফলন ভালো হওয়ায় বেড়ে চলেছে আম উৎপাদনের পরিধিও। রংপুর সদর, মিঠাপুকুর ও বদরগঞ্জ উপজেলার বিস্তৃত এলাকার ফসলি জমি, বাগানসহ উঁচু-নিচু ‍ও পরিত্যক্ত জমিতে চাষ হচ্ছে এই আম।

রংপুর সদর এলাকা ছেড়ে মিঠাপুকুরের খোড়াগাছ ইউনিয়নের পদাগঞ্জে যেতে দেখা মিলবে সারি সারি গাছ। রাস্তার দুপাশে যেন হাঁড়িভাঙা আম গাছের সবুজ বিপ্লব। ধানসহ বিভিন্ন ফসলি জমির আইলে আইলে লাগানো হয়েছে আমের গাছ। বাদ পড়েনি বসতবাড়ির পরিত্যক্ত জায়গা, পুকুরপাড় ও বাড়ির উঠান। এখন গাছে গাছে দোল খাচ্ছে অপরিপক্ক হাঁড়িভাঙা। একই চিত্র মিঠাপুকুরের আখিরাহাট, মাঠেরহাট, বদরগঞ্জের গোপালপুর, নাগেরহাট, সর্দারপাড়া, রংপুর সদরের সদ্যপুষ্করনী ইউনিয়নের কাঁটাবাড়ি, পালিচড়া এলাকাতেও।

গত কয়েক বছরের মতো এবারও হাঁড়িভাঙার বাম্পার ফলন হয়েছে। যদিও হাঁড়িভাঙার দাম পাওয়া নিয়ে শঙ্কায় চাষি এবং ব্যবসায়ীরা। প্রতি বছর কম বেশি শত কোটি টাকার ওপরে বিক্রি হয় হাঁড়িভাঙা আম। কিন্তু আমের জন্য খ্যাত শ্যামপুরের পদাগঞ্জ হাটের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি না হওয়ায় দুশ্চিন্তায় আছেন চাষিরা। সঠিক সময়ে আম বাজারজাত ও পরিবহন সুবিধা বাড়ানো না গেলে রয়েছে লোকসানের আশঙ্কা।

কৃষি বিভাগ বলছেন, জুনের শেষ সপ্তাহে বাজারে মিলবে পরিপক্ক হাঁড়িভাঙা আম। এর আগে বাজারে হাঁড়িভাঙা আম পাওয়া গেলেও তা অপরিপক্ক হবে। হাঁড়িভাঙার প্রকৃত স্বাদ পেতে জুনের শেষ সপ্তাহ পর্যন্ত অপেক্ষায় থাকতে হবে।

বর্তমানে বাগানগুলোতে আমের পরিচর্যা চলছে। নির্ধারিত সময়ে আম বাগান মালিক ও চাষিরা গাছ থেকে হাঁড়িভাঙা আম পাড়তে পারবেন। এরপর থেকে শুরু হবে বাজারজাত। তবে চাষি ও ব্যবসায়ীদের দাবি আবহাওয়া প্রতিকূলে বা প্রচণ্ড গরম থাকলে জুনের শুরুতেই বাণিজ্যিকভাবে বাজারে হাঁড়িভাঙা আম বিক্রি শুরু হবে।

রংপুর সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, এ বছর রংপুর জেলায় ১ হাজার ৯০৫ হেক্টর জমিতে আম চাষ হয়েছে। যা গত বছরের তুলনায় বেশি। তাছাড়া ঝড় কিংবা বড় ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হওয়ায় আমের তেমন ক্ষতি হয়নি। তবে ১ মাসের অধিক দাবদাহ থাকায় কিছুটা ক্ষতি হয়েছে। তারপরও গত বছরের তুলনায় এবারে বেশি আমের ফলন হয়েছে।

খোড়াগাছ ইউনিয়নের তেকানি গ্রামের আমচাষি শাহ্জাহান মিয়া বছর দশেক আগেও শুধু ধান, ভুট্টা আর পাটচাষ করতেন। কিন্তু গ্রামে হাঁড়িভাঙা আম গাছের বাগানের পর বাগান দেখে তিনিও আমের বাগান গড়ে তোলেন।

অর্থনৈতিকভাবে লাভবান এই আমচাষি বলেন, আল্লাহয় দেচে এবার আম ভালো হইচে। গাছোত আম দেকে মনে শান্তি পাই। আল্লাহ রহম করলে আম ব্যাচে ঋণ পরিশোধ করমো। হাঁড়িভাঙা আম খুব সুস্বাদু মিষ্টি। চাহিদাও অনেক বেশি। এবার আশা করি ভালোয় বেচাবিক্রি হইবে।

আখিরাহাট এলাকার আমচাষি নজরুল ইসলাম বলেন, কতাত কয় না, অভাবোত স্বভাব নষ্ট। আগোত উপায় না থাকাতে মাইনসে খালি ধান আবাদ করছে। এ্যলা হামরা ধান আবাদ করি খাওয়ার জনতে, আর আম করছি লাভের জনতে। খালি হামার গ্রামোতে নোয়ায় এ্যলা হাঁড়িভাঙা আম চাবালুয়া, শ্যামপুর, হেলেঞ্চ, পাইকারেরহাট, জারুল্লাপুর, খোঁড়াগাছ, গোপালপুর, সরদারপাড়া, লালপুর, পদাগঞ্জ, তেকানি, দুর্গাপুরসহ মেলা কয়টা গ্রামোত চাষ হওচে। গ্রামোত একটা বাড়িও খুঁজি পাওয়া যাবার নায় যে বাড়ির খুলিত হাঁড়িভাঙার গাছ নাই।

হাঁড়িভাঙা আমকে ঘিরে বেকারের সংখ্যাও কমেছে রংপুরসহ আশপাশের কয়েকটি উপজেলায়। বিশেষত মিঠাপুকুরের লালপুর, পদাগঞ্জ, তেকানিসহ আশপাশের গ্রামের বেকার যুবকরা এখন আম ব্যবসায় জড়িয়ে বেকারত্ব দূর করেছেন। অনেকে আবার উদ্যোক্তা হিসেবে হাঁড়িভাঙার বাজার সম্প্রসারণ ও চাষাবাদ বাড়ানোর জন্য কাজ করছেন।

তরুণ উদ্যোক্তা ও আমচাষি মেহেদী হাসান পলাশ বলেন, প্রথমে পরীক্ষামূলকভাবে আম চাষ শুরু করেছিলাম। লাভবান হওয়ার পর থেকে এখন বাণিজ্যিকভাবে হাঁড়িভাঙা আমের চাষাবাদ ও ব্যবসা করছি। নিজের পাশাপাশি এলাকার অন্যদের কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে চেষ্টাও করছি।

টেকসই অর্থনীতির জন্য হিমাগার স্থাপন, আধুনিক আমচাষ পদ্ধতি বাস্তবায়ন, গবেষণা কেন্দ্র স্থাপনসহ হাঁড়িভাঙাকে জিআই পণ্য হিসেবে ঘোষণার দাবি জানান জানান হাঁড়িভাঙা আমের সম্প্রসারক আব্দুস সালাম সরকার।

তিনি বলেন, সরকার প্রধানের উদ্যোগে দেশ-বিদেশে হাঁড়িভাঙা আম রপ্তানি শুরু হয়েছে। আমরা এতে খুশি। তবে আর একটু দৃষ্টি দিলেই হাঁড়িভাঙাকে ঘিরেই এই অঞ্চলের অর্থনীতি আরও সচল হবে। এজন্য সরকারের কৃষি সম্প্রসারণ, কৃষি বিপণন ও পরিবহন এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সমন্বয়ে যৌথ ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলা জরুরি।

আমচাষি ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এ বছর ২২০-২৫০ কোটি টাকার আম বিক্রির আশা স্থানীয় আম চাষিদের। তবে আবহাওয়া ভালো থাকলে হাঁড়িভাঙাসহ বিভিন্ন জাতের আম দেশের চাহিদা মিটিয়ে এবারও বিদেশে রপ্তানি করা সম্ভব হবে।

এদিকে রংপুর অঞ্চলে হাঁড়িভাঙা আমের ফলন বেশি হলেও ফজলি, এছাহাক, ছাইবুদ্দিন, সাদা ল্যাংড়া, কালা ল্যাংড়া, কলিকাতা ল্যাংড়া, মিশ্রিভোগ, গোপালভোগ, আম্রপালি, সাদারুচিসহ আরও নানা প্রজাতির আম উৎপাদন হয়ে আসছে। এসব আমের ভিড়ে এখন সবচেয়ে বেশি চাহিদা হাঁড়িভাঙার। একটি হাঁড়িভাঙা আমের ওজন ২শ থেকে সাড়ে ৪শ গ্রাম পর্যন্ত হয়ে থাকে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক ওবায়দুর রহমান এই প্রতিবেদক কে বলেন, এখন ব্যাপকভাবে হাঁড়িভাঙা আম চাষ হচ্ছে। খুব বেশি পরিশ্রম ও অর্থ বিনিয়োগ করতে না হওয়ায় মানুষ আমচাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন। চাষি, ব্যবসায়ী ও বাগান মালিকদের কৃষি বিভাগ

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ